গত বৃহস্পতিবার বাড়ি থেকে বেরিয়ে উল্লাসের দ্বিতীয় গেটটা ধরে কিছুটা এগিয়ে চোখে পড়লো শামীম উবু হয়ে বসে লেপ বুনছে। বেশ একটা তাড়াহুড়ো ভাব। গুড়িসুরি মেরে নেবে আসা সন্ধ্যার প্রায়ান্ধকারে দেখি পাশের চায়ের গুমটিতে বেশ ভীড়। গায়ে তাদের চাদর বা সোয়টার। বুঝলাম শুধু আমি না, প্রত্যেকেই যথার্থ শীতার্ত।

আজ বাড়ির সামনে দিয়ে একটা লোক সাত সকালেই জয়নগরের মোয়া হাঁকতে হাঁকতে যাচ্ছিল। ডাকলাম লোকটাকে। এ কোথাকার জয়নগর? জিজ্ঞেস করলাম। জয়নগরের আসল মোয়া, বাবু। লোকটা হাঁড়ির ঢাকনা খুলতে খুলতে বললো। জয়নগর বুঝি বাড়ির পাশে যে সক্কাল সক্কাল হাজির হলে?এবার দেখলাম লোকটার কেমন কাঁচুমাচু ভাব। কে জানে সবাই জয়নগরের মোয়া বলে, আমিও তাই বলি। এটা আমার বানানো। কিনলাম একটা। মুখেও পুরলাম। আর একটু কথা বলে যা বুঝলাম লোকটা গাংপুরে থাকে। গাংপুরের জয়নগরের মোয়া খেতে মন্দ লাগলো না!

ক্যামরি হাসপাতালের আগের মাঠটায় কাল দুপুরে ছেলেরা ক্রিকেট খেলছিল। সাদা জামা – প্যান্ট। লাল ডিউজ বল। ব্যাটসম্যানদের মাথায় হেলমেট। বাকিদের টুপি। সবকিছু কপিবুক। অফ ড্রাইভ টাও। চারিদিকে প্রশংসার হাততালি। ব্যাটসম্যান হেলমেট খুলে অভিবাদন গ্রহণ করলো।

আজ ট্রেনে আমার সামনের সিটে বসা সহযাত্রীটি হাঁটুতে তাল দিতে দিতে চলছিলেন। কানে হেড ফোন লাগানো। মেমারি নাববার আগে কৌতূহল নিয়ে জিজ্ঞেস করলাম কী শুনছেন? রবিশঙকর-আলি আকবরের যুগলবন্দী। ভদ্রলোক বললেন মৃদু হেসে।

অনেকদিন আগে, এই মৃদু হেসেই একজন গাইতেন না হারমোনিয়াম বাজিয়ে কোন এক ছোট হয়ে আসা হালকা কুয়াশাঘেরা দিনে? — এল যে শীতের বেলা বরষ পরে…

শীতের আবহ কি একটু স্মৃতিমেদুর করে তোলে? জানি না। হয়তো করে। আর তাই শীতের বেলা আসে ঠিক বাইরে নয়। ভেতরেও। মনের গহীনে।

This Post Has One Comment

  1. অনন্যা

    আমাকেও স্মৃতিমেদুর করে তুললে…..

Leave a Reply to অনন্যা Cancel reply